বাংলাদেশী হিসেবে কেন মোদির বিরোধীতা করবো?

img

নুরবিডি ডটকম নিউজ : বাংলাদেশী হিসেবে কেন মোদির বিরোধীতা করবো, এটা আসলে পরিষ্কার করা দরকার। ব্যক্তি মোদির সাথে আমার বাংলাদেশী হিসেবে শত্রুতা নেই, কিন্তু মোদি যে চেতনা ধারণ করে আমি সেটার বিরোধী। মোদির সে চেতনার নাম হলো অখণ্ড ভারতের চেতনা।
রামায়ন, গীতা বা মহাভারত নামক গ্রন্থগুলোতে সেই অখণ্ড ভারতের কল্পনা করা হয়েছে।সেই অখণ্ড ভারত থাকবে হিন্দুত্ববাদী শাসন।ভারতসহ বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, ভূটান, নেপাল, আফগানিস্তান সেই অখণ্ড ভারতের অন্তর্ভূক্ত। অখণ্ড ভারত তত্ত্বে বিশ্বাসীরা আশা করে মোদি আসার মাধ্যমে সেই অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠা পথ সুগম হবে। অর্থাৎ বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপাল, আফগানিস্তানসব আবার ভারতের অন্তর্ভূক্ত হবে।

মোদি নিজেও প্রায়শঃই তার বক্তব্যগুলোতে সেই অখণ্ড ভারত তৈরীর আশা জনগণকে দেয়।
মোদির মত যারা তার বিরোধী, মানে অখণ্ড ভারত তত্ত্বে বিশ্বাসী, আমি তাদের বিরোধীতা করি।যারা অখণ্ড ভারত তত্ত্বে বিশ্বাসী, যারা যদি ভারতীয় না হয়ে বাংলাদেশের নাগরিকও হয়, তবুও আমি তাদেরও বিরোধীতা করি, তাদের রাজাকার নামে ডাকি।
আপনি সম্প্রতি সময়ে দেখবেন, অনেক হিন্দু ধর্মাবলম্বী পুরুষরা ডান হাতে আর নারীরা বাম হাতে লাল সুতা বাধতেছে।অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠার শপথ নিয়েই তারা এ কার্যক্রম শুরু করছে। আমি এ গোষ্ঠীটিরও বিরোধীতা করি।

আমার কথা হচ্ছে, বাংলাদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বী থাকুক সমস্যা নাই, কিন্তু অখণ্ড ভারত তত্ত্বে বিশ্বাসীরা থাকতে পারবে না। বাংলাদেশের নাগরিক হতে হলে তাদেরকে অবশ্যই অখণ্ড ভারতের বিরুদ্ধচারণ করতে হবে। আর অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধাচারণ থেকে মোদিরও বিরোধীতা করতে হবে।অখণ্ড ভারত তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করতে ভারতে হিন্দুত্ববাদীরা গিয়ে মুসলিম নির্যাতন করা হচ্ছে, গরু জবাই বন্ধ করা হচ্ছে, মসজিদ ভাঙ্গা হচ্ছে, কাশ্মীরে আগ্রাসন চালানো হচ্ছে।

সুতরাং অখণ্ড ভারত তত্ত্বের বিরোধীতা করতে গেলে ভারতে সংগঠিত এসমস্ত কর্মকাণ্ডেরও বিরোধীতা করতে হবে। কিন্তু অতি দুঃখের বিষয় হলো, বাংলাদেশে বসবাসকারী হিন্দুরা মোদির আগমনের বিরোধীতা করে এখন পর্যন্ত কোন বক্তব্য দেয় নাই। এমনকি ভারতে সংখ্যালঘুদের উপর করা নির্যাতনের বিরুদ্ধে কোন বিবৃতি দেয় নাই। বরং ভারতের গরু জবাই বন্ধ হলে তারা বাংলাদেশেও সেই আইন জারির দাবী তুলেছিলো।

আরো দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, তারা নির্যাতিত হলে বাংলাদেশের সরকার-প্রশাসনের কাছে যতটা না প্রতিকার চায়, তার থেকে ঢের প্রতিকার চায় মোদির কাছে। তারা চায় মোদি এসে তাদের উদ্ধার করুক। কারণ তারা যতটা না নিজেদের বাংলাদেশের নাগরিক ভাবে, তার থেকে ঢের ভাবে অখণ্ড ভারতের হিসেবে। এবং অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখা মোদিকে তারা নিজেদের রক্ষা কর্তা হিসেবে মনে করে।
তাই অখণ্ড ভারতের বিরোধীতা করে আমরা যেমন মোদির বিরোধীতা করবো,ঠিক তেমনি বাংলাদেশে থেকেও যে সমস্ত হিন্দু ধর্মাবলম্বী অখণ্ড ভারত তত্ত্বকে সমর্থন করে যাচ্ছে,আমরা তাদেরও বিরোধীতা করবো।

বাংলাদেশে থাকলে চাইলে অবশ্যই তাদেরকেও অখণ্ড ভারত তত্ত্বের বিরোধীতা করেই বাংলাদেশে থাকতে হবে,নয়ত রাজাকারগিরি করে তারা এদেশে থাকতে পারবে না, কোন সুযোগ সুবিধা পাবে না।
চলে যেতে হবে তাদের পেয়ারা ভারতে।
স্বাধীন সম্প্রীতির এই দেশে ইসলাম বিদ্বেষী উগ্রবাদী সন্ত্রাসী নরেন্দ্র মোদির স্থান নেই।
সবাই আওয়াজ তুলুন, যে যেভাবে পারেন প্রতিবাদ করুন। আর কত চুপ থাকবেন?
ঘুমন্ত বিবেকটাকে এবার জাগ্রত করুন।